০৩:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাগমারায় ছয় মাসে চুরি হয়েছে অর্ধ কোটি টাকার পান চোর ধরা পড়লেও হয়নি উপযুক্ত বিচার 

স্টাফ রিপোর্টার খোরশেদ আলম 

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বারুইপাড়া ও এর আশেপাশের গ্রাম বসন্তপুর, বিলবাড়ী সহ কয়েকটি গ্রামে বিগত ছয় মাসে ধারাবাহিক ভাবে পানবরজ থেকে পান চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। 
এই ঘটনায় দরিদ্র কৃষকদের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার পান চুরি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিমত। এই ঘটনায় সর্বশেষ ২৭ মে ২০২৫ ইং  বারুইপাড়া গ্রামের খোদা বক্স মৃধার ছেলে আঃ রাজ্জাক বসন্তপুর গ্রামে পান চুরির সময় ধরা পড়েন এবং পরে শালিষ বৈঠকে তার পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

শুক্রবার (১৩ জুন -২৫ ইং) বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়- গত ২৭/০৫/২৫ ইং তারিখে (আনুমানিক) ভোর ৪ টার সময় বাগমারা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মোঃ মেছের আলীর ছেলে মেহের আলীর পান বরজ থেকে পান চুরি করছিলো আঃ রাজ্জাক।এসময় পাহারারত পান বরজের মালিক মেহের আলী হাতে নাতে ধরে ফেলেন রাজ্জাক কে। পরে রাজ্জাক পালিয়ে যান তার নিজ বাড়ী বারুইপাড়াতে ।

 এর কিছুক্ষণ পরে পান বরজের মালিক মেহের আলীসহ বসন্তপুর ও বারুইপাড়া গ্রামের  কিছু লোকজনকে নিয়ে জিজ্ঞাসা বাদে রাজ্জাক স্বীকার করেন পান চুরির ঘটনা। পরে রাজ্জাক কে, কে বা কাহারা সুকৌশলে  রাজ্জাক কে বাড়ী থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন বলে এলাকাবাসী দাবি করেন।

এলাকাবাসী আরও জানান, এরপর তড়িঘড়ি করে সকাল হওয়ার আগেই একটি নামমাত্র শালিশ বৈঠকে ঘটনার মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। উক্ত শালিস বৈঠকে মোঃ আঃ ছামান আলী, সৈয়দ আলী, টিপু সুলতান, এনামুল হক, বাবুল হোসেন, তনজেব আলী, সেনামুল হক নেতৃত্ব দেন । সালিশি বৈঠকে আব্দুর রাজ্জাক কে না পাওয়ায় তার স্ত্রীর প্রতি রাজ্জাক কে পালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দিয়ে পালাতে সহযোগিতা করার অপরাধে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

এছাড়া বলা হয়, রাজ্জাক কে ধরতে পারলে পান চুরির বিচার করা হবে। এছাড়া ঘোষণা করা হয় যে, ব্যক্তি রাজ্জাক কে ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। বৈঠক শেষে বসন্তপুরের লোকজনকে পরবর্তী বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়।  এবং ততদিন এই টাকা কাউকে দেওয়া হবে না বলে জমা রাখা হয় সৈয়দ আলীর কাছে।

কিন্তু ঘটনার প্রায় ১০ দিন পর উক্ত টাকা বারুইপাড়া গ্রামের  উপরোক্ত শালিস প্রধানদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

এ বিষয়ে সালিশি প্রধান মোঃ ছামান আলী জানান, আমরা সালিশ বৈঠক করেছি, পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছি । সে টাকার মধ্যে মাদ্রাসা মসজিদ ক্লাবে ২৫ হাজার টাকার দিয়েছি। বাঁকি টাকা ক্যাশে জমা রয়েছে। বর্তমান রাজ্জাক বাড়ী থেকে পালিয়ে রয়েছেন। 

এব্যাপারে শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন জানান, এব্যাপারে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে শুনেছি যে একটা শালিশ বৈঠক করে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তৈহিদুল ইসলাম জানান, পান চুরির বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে একতা যুব সংঘের নিজস্ব অর্থায়নে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন

বাগমারায় ছয় মাসে চুরি হয়েছে অর্ধ কোটি টাকার পান চোর ধরা পড়লেও হয়নি উপযুক্ত বিচার 

আপডেট সময় : ০২:২৫:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার খোরশেদ আলম 

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বারুইপাড়া ও এর আশেপাশের গ্রাম বসন্তপুর, বিলবাড়ী সহ কয়েকটি গ্রামে বিগত ছয় মাসে ধারাবাহিক ভাবে পানবরজ থেকে পান চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। 
এই ঘটনায় দরিদ্র কৃষকদের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার পান চুরি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিমত। এই ঘটনায় সর্বশেষ ২৭ মে ২০২৫ ইং  বারুইপাড়া গ্রামের খোদা বক্স মৃধার ছেলে আঃ রাজ্জাক বসন্তপুর গ্রামে পান চুরির সময় ধরা পড়েন এবং পরে শালিষ বৈঠকে তার পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

শুক্রবার (১৩ জুন -২৫ ইং) বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়- গত ২৭/০৫/২৫ ইং তারিখে (আনুমানিক) ভোর ৪ টার সময় বাগমারা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মোঃ মেছের আলীর ছেলে মেহের আলীর পান বরজ থেকে পান চুরি করছিলো আঃ রাজ্জাক।এসময় পাহারারত পান বরজের মালিক মেহের আলী হাতে নাতে ধরে ফেলেন রাজ্জাক কে। পরে রাজ্জাক পালিয়ে যান তার নিজ বাড়ী বারুইপাড়াতে ।

 এর কিছুক্ষণ পরে পান বরজের মালিক মেহের আলীসহ বসন্তপুর ও বারুইপাড়া গ্রামের  কিছু লোকজনকে নিয়ে জিজ্ঞাসা বাদে রাজ্জাক স্বীকার করেন পান চুরির ঘটনা। পরে রাজ্জাক কে, কে বা কাহারা সুকৌশলে  রাজ্জাক কে বাড়ী থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন বলে এলাকাবাসী দাবি করেন।

এলাকাবাসী আরও জানান, এরপর তড়িঘড়ি করে সকাল হওয়ার আগেই একটি নামমাত্র শালিশ বৈঠকে ঘটনার মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। উক্ত শালিস বৈঠকে মোঃ আঃ ছামান আলী, সৈয়দ আলী, টিপু সুলতান, এনামুল হক, বাবুল হোসেন, তনজেব আলী, সেনামুল হক নেতৃত্ব দেন । সালিশি বৈঠকে আব্দুর রাজ্জাক কে না পাওয়ায় তার স্ত্রীর প্রতি রাজ্জাক কে পালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দিয়ে পালাতে সহযোগিতা করার অপরাধে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

এছাড়া বলা হয়, রাজ্জাক কে ধরতে পারলে পান চুরির বিচার করা হবে। এছাড়া ঘোষণা করা হয় যে, ব্যক্তি রাজ্জাক কে ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। বৈঠক শেষে বসন্তপুরের লোকজনকে পরবর্তী বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়।  এবং ততদিন এই টাকা কাউকে দেওয়া হবে না বলে জমা রাখা হয় সৈয়দ আলীর কাছে।

কিন্তু ঘটনার প্রায় ১০ দিন পর উক্ত টাকা বারুইপাড়া গ্রামের  উপরোক্ত শালিস প্রধানদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

এ বিষয়ে সালিশি প্রধান মোঃ ছামান আলী জানান, আমরা সালিশ বৈঠক করেছি, পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছি । সে টাকার মধ্যে মাদ্রাসা মসজিদ ক্লাবে ২৫ হাজার টাকার দিয়েছি। বাঁকি টাকা ক্যাশে জমা রয়েছে। বর্তমান রাজ্জাক বাড়ী থেকে পালিয়ে রয়েছেন। 

এব্যাপারে শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন জানান, এব্যাপারে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে শুনেছি যে একটা শালিশ বৈঠক করে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তৈহিদুল ইসলাম জানান, পান চুরির বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।