০১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোশ্যাল মিডিয়ায় কলেজ শিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, ধর্ষণের অভিযোগ ছাত্রীর

  • রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
  • ৫৪২ বার পড়া হয়েছে

ইমাম হাসান জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের দুটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ৫৬ সেকেন্ড ও ১১ সেকেন্ডের ভিডিও দুটিতে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় এক নারী ও অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে।

বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ভিডিওতে থাকা ওই ছাত্রী। এমনকি ভিডিওটি নিজেই ধারণ করেছেন বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের প্রভাষক। পাশাপাশি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাবের (টাউন ক্লাব) সদস্য। তার বাড়ি জেলা শহরের হুজরাপুর এলাকায়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর অভিযোগ, কয়েক মাস আগে মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের বাড়িতেই ঘটে ধর্ষণের এ ঘটনা। অভিযুক্ত শিক্ষক চন্দনের বড় ভাই নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোদাস্বের হোসেন সুমনের কাছে পড়তেন বলে জানান ওই ছাত্রী।

তিনি অভিযোগ করেন, আমরা চন্দনের বড় ভাই সুমনের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। প্রথম ঘটনার দিন আমাদের প্রাইভেট ছিল না। সুমন স্যারের কাছে একটা বই নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্যার আরেকটা ব্যাচ পড়াচ্ছিলেন। তাই স্যারের কথামতো পাশের একটি রুমে বসে অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় চন্দন এসে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গেট লাগিয়ে দেয়ায় চেষ্টা করলেও বের হতে পারিনি৷

তিনি আরও বলেন, প্রথমদিন এমন ঘটনা ঘটার পর আবার আমাকে ফোন দিয়ে ডাকে। এ সময় আমি স্বেচ্ছায় তার বাসায় গিয়ে পরিকল্পিতভাবে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করি। শুধু আমার সাথেই মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন এমনটা করেছে তা নয়; আমার এক বান্ধবীসহ অনেক ছাত্রীকেই পড়ানোর সময় সুযোগ পেলেই শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন। এমনকি বাজে প্রস্তাব দিতেন।

তার চরিত্রে সমস্যা আছে জানিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী আরও বলেন, মেয়েদের সঙ্গে কথা বললেই নানারকম কুপ্রস্তাব দেন চন্দন। বিষয়টি তার ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বললেই জানতে পারবেন।

ভিডিও ভাইরালের বিষয়টি তিনি বান্ধবীদের কাছে জানতে পেরেছেন। তবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই কলেজছাত্রী।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভিডিও দুটি ভাইরাল হলে এ নিয়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান অনেকেই।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১৪ মার্চ) নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ মো. তরিকুল ইসলাম সিদ্দিকী মোবাইলে বলেন, গতরাতে সোস্যাল মিডিয়ায় আমরাও ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। এ নিয়ে কী করা যায়, তা ঠিক করতে গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার ভাই নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোদাস্বের হোসেন সুমন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এরপর আর এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, আপত্তিকর ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে৷ এ বিষয়ে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৩ দফা দাবির বাস্তবায়নে তানোরে মানববন্ধন

সোশ্যাল মিডিয়ায় কলেজ শিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, ধর্ষণের অভিযোগ ছাত্রীর

আপডেট সময় : ১১:১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

ইমাম হাসান জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের দুটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ৫৬ সেকেন্ড ও ১১ সেকেন্ডের ভিডিও দুটিতে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় এক নারী ও অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে।

বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ভিডিওতে থাকা ওই ছাত্রী। এমনকি ভিডিওটি নিজেই ধারণ করেছেন বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের প্রভাষক। পাশাপাশি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাবের (টাউন ক্লাব) সদস্য। তার বাড়ি জেলা শহরের হুজরাপুর এলাকায়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর অভিযোগ, কয়েক মাস আগে মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দনের বাড়িতেই ঘটে ধর্ষণের এ ঘটনা। অভিযুক্ত শিক্ষক চন্দনের বড় ভাই নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোদাস্বের হোসেন সুমনের কাছে পড়তেন বলে জানান ওই ছাত্রী।

তিনি অভিযোগ করেন, আমরা চন্দনের বড় ভাই সুমনের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। প্রথম ঘটনার দিন আমাদের প্রাইভেট ছিল না। সুমন স্যারের কাছে একটা বই নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্যার আরেকটা ব্যাচ পড়াচ্ছিলেন। তাই স্যারের কথামতো পাশের একটি রুমে বসে অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় চন্দন এসে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গেট লাগিয়ে দেয়ায় চেষ্টা করলেও বের হতে পারিনি৷

তিনি আরও বলেন, প্রথমদিন এমন ঘটনা ঘটার পর আবার আমাকে ফোন দিয়ে ডাকে। এ সময় আমি স্বেচ্ছায় তার বাসায় গিয়ে পরিকল্পিতভাবে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করি। শুধু আমার সাথেই মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন এমনটা করেছে তা নয়; আমার এক বান্ধবীসহ অনেক ছাত্রীকেই পড়ানোর সময় সুযোগ পেলেই শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন। এমনকি বাজে প্রস্তাব দিতেন।

তার চরিত্রে সমস্যা আছে জানিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী আরও বলেন, মেয়েদের সঙ্গে কথা বললেই নানারকম কুপ্রস্তাব দেন চন্দন। বিষয়টি তার ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বললেই জানতে পারবেন।

ভিডিও ভাইরালের বিষয়টি তিনি বান্ধবীদের কাছে জানতে পেরেছেন। তবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই কলেজছাত্রী।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভিডিও দুটি ভাইরাল হলে এ নিয়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান অনেকেই।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১৪ মার্চ) নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ মো. তরিকুল ইসলাম সিদ্দিকী মোবাইলে বলেন, গতরাতে সোস্যাল মিডিয়ায় আমরাও ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। এ নিয়ে কী করা যায়, তা ঠিক করতে গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন চন্দন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার ভাই নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোদাস্বের হোসেন সুমন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এরপর আর এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, আপত্তিকর ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে৷ এ বিষয়ে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।