
দেলোয়ার হোসেন সোহেল
আবহাওয়া পরিবর্তনের পাশাপাশি মিষ্টি শীতল হাওয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে ঋতুর পরিক্রমায় শীত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে শীতের আমেজ ভালোভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর শীতে উষ্ণতা পেতে লেপের কোনো বিকল্প নেই। তবে পিছিয়ে নেই কম্বল বিক্রিও। তবে আধুনিকতা আর পরিবর্তনে মানুষের ঘরে ঘরে এখন রঙ-বেরঙের কম্বলের ব্যবহার হলেও লেপের কদর কমেনি।
শীতের লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কারিগররা। কম্বল কম্ফোটারের সময়ও লেপ তৈরির ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তানোর উপজেলার প্রফুল্ল কর্মকার। তিনি প্রায় ৪০ বছর থেকে লেপ, তোশক, জাজিমসহ আরামদায়ক অনেক কিছুই বানিয়ে আসছেন।
জন্মস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা মনাকষাতেও হলেও তিনি ৬ মাস তানোরের কামারগাঁ বাজারে লেপ তৈরির কাজ করেন। প্রফুল্ল কর্মকার বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছর যাবৎ লেপ তোষক বানিয়ে আসছি। আমার পরিবার থেকে এই ব্যবসা পেয়েছি। এই ব্যবসা করে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।
তিনি জানান, একটি ৪ থেকে ৫ হাত লেপের দাম পড়ে ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। একটি লেপ তৈরিতে মজুরি নেওয়া হয় ৫০০ টাকা। একটি তোশক বাণীসহ ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা, জাজিম বানাতে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। তবে তুলার ওজনের কম বেশিতে দামও কমবেশি হয়।
লেপ-তোশকের কারিগর প্রফুল্ল কর্মকারের সাথে তার ছেলে প্রদীপ কর্মকার এই কাজে সহযোগিতা করে আসছে। সে লেপ তোশক বা গদির উপরে সুতা দিয়ে বিভিন্ন নকশা তৈরি করে। বাবা ছেলের এই সেলাই কাজে দারুণ মিল।
পরিবারিক ব্যবসা সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন প্রদীপ কর্মকার। তবে বছরের বাকি ৬ মাস তারা বাবা ছেলে আমলিচুর ব্যবসা করেন।
এদিকে তানোরে শীতে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ, তোশক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছে তানোর গোল্লাপাড়া বাজার, মুণ্ডুমালা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারের দোকানগুলোতে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সুঁইসুতো নিয়ে কাজ করছে কারিগররা। এখানকার লেপতোশক তৈরির ১২ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল আটটা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।
তবে এই শীতে বেড়েছে কম্বলের চাহিদাও। তানোরের বিভিন্ন বাজাওে বিক্রি হচ্ছে কম্বল। আকার ভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।